• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ Who Are Jordanian Mail Order Brides? The Ultimate Guide To Dating Laotian Women ‘বিরসকাব্য’ হয়ে যায় ‘বউয়ের জ্বালা’! নাটকের উদ্ভট নাম নিয়ে মোশাররফ করিমের হতাশা ইয়াশ রোহানের প্রিয় অভিনেতা সেদিন টি–শার্ট পরে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন ইরফান বরাবরই আমরা রবীন্দ্রনাথের কাছে ফিরি অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে মুখ খুললেন এমিলি ভেবেছিলাম মরেই যাব, প্রতিদিন ৩০ ওষুধ ও ইনজেকশন নিতে হয়েছে : মৌনি রায় তবে কি অন্তঃসত্ত্বা দীপিকার সংসারে ভাঙনের সুর? সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণ দিবস শাহিদ-কারিনার সম্পর্ক ও বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন ইমতিয়াজ আলি নীলফামারীতে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ অ্যাম্বুলেন্সে এসে ভোট দিলেন অসুস্থ বৃদ্ধ পাকুন্দিয়ায় জাল ভোট দেওয়ায় তিন জনকে সাজা

‘গাড়ি কোথায়’ অ্যাপে ওঠে সড়কের চাঁদা

বিশেষ প্রতিনিধি কার্যক্রম সেবামূলক, স্লোগান– ‘গাড়ির খবর থাকে অ্যাপে, দেখাও যায় ম্যাপে’। অনলাইনে চালক ও তাদের সহকারীদের যুক্ত করে সেবার আড়ালে দুই বছর ধরে ভয়াবহ জালিয়াতি করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ কাজে তারা ব্যবহার করে ‘গাড়ি কোথায়’ অ্যাপস। গাড়ির ট্র্যাকিং সার্ভিস দিতে ফেসবুক ও নিজস্ব ওয়েবসাইটে হটলাইন নম্বরও রয়েছে। চার দিন আগেও ফেসবুকের এক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি ট্র্যার্কিং সার্ভিস সেবা দিতে দেশজুড়ে ডিলার নিয়োগের ঘোষণা দেয়। এর পর ডিলারদের মাধ্যমে ফিটনেসবিহীন কাভার্ভ ভ্যান, ট্রাক ও লরির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকে। এভাবে প্রায় আড়াই হাজার যানবাহন সড়কে নির্বিঘ্নে চলাচলের ব্যবস্থা করে। এসব গাড়িতে দেওয়া হয় বিশেষ টোকেন। অসাধু পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করে গাড়িগুলো অবাধে সারাদেশে চলাচল করে। বিনিময়ে তারা মাসে মাসে টাকা দিয়েছে। এ ডিজিটাল ঘুষের বেশির ভাগ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। চক্রের অনেকে আবার ভুয়া পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে চালক-হেলপারের কাছ থেকেও টাকা আদায় করতো। গাড়ি কোথায় অ্যাপসের আড়ালে সড়ক থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা মাসোহারা তোলা হয়, যা চমকে ওঠার মতো বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

দীর্ঘদিন ছায়া নজরদারির পর সোমবার রাতে রাজধানীর রূপনগর এলাকা থেকে চক্রের নয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলো– টাঙ্গাইল কালিহাতীর পশ্চিমপাড়ার নজরুল ইসলাম, আল-আমিন, মোস্তকিন, রুবেল আহমেদ, মামুনুর রশিদ, আল আমিন হোসেন, মো. প্লাবন, জনি আহমেদ ও নাহিদ। তাদের কাছ থেকে ৮০০ মাসিক কার্ড, ১১০টি স্টিকার ও একটি ডায়েরি জব্দ করা হয়।

কীভাবে, কার মাধ্যমে ৬৪ এলাকায় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা ও চাঁদাবাদি হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে গ্রেপ্তাররা। গাড়ি কোথায় অ্যাপে ডিলার হিসেবে কাজ করছে এমন সাতজনের সঙ্গে পরিচয় গোপন রেখে কথা হয়।তাদের মধ্যে টাঙ্গাইলের আনিছ বলেন, ‘গাড়ি কোথায়’ আগে ‘ফিউচার’ নামে কার্যক্রম চালাত। হঠাৎ নাম বদল করা হয়। লুকিং গ্লাস ভাঙা, বাড়তি গতির মতো টুকটাক সমস্যার জন্য পুলিশ রাস্তায় গাড়ি ধরে। পুলিশি এ ঝামেলা মিটমাট করে দিতেন গাড়ি কোথায়ের লোকজন। এজন্য পিকআপপ্রতি মাসে দেড় হাজার ও ট্রাকপ্রতি ২ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কোম্পানির সঙ্গে জড়িত থাকলে গাড়ির চালক বা হেলপার সরাসরি গাড়ি কোথায়ের লোকদের সমস্যা জানাতে পারে। এর পর পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা।মো. সাঈদ নামে আরেক পিকআপ চালক জানান, প্রতি মাসে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে তিনি কার্ড নিতেন। বাকিতেও কার্ড দিত, পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হতো।যশোরে গাড়ি কোথায়ের ডিলার রোমান। তিনি বলেন, আমি জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম সরবরাহ করি। কেউ এ সার্ভিস নিলে মাসে ৩০০ টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া গ্রাহককে একটি জিপিএস ডিভাইস কিনতে হয় ৩ হাজার টাকায়। অনেকে পুরো বছরের জন্যও সেবা নেন, দিতে হয় ৪ হাজার ৫০০ টাকা। তবে অ্যাপসের আড়ালে রাস্তায় পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করার বিষয় অস্বীকার করেন রোমান।

সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জালিয়াতিতে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যদেরও নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই ও অনেকের ব্যাংক লেনদেনও পরীক্ষা করা হচ্ছে।তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ডিজিটাল এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের তৌহিদুল ইসলাম,  রাজধানীর মানিকদী এলাকার মো. সোহেল, শরীয়তপুরের দক্ষিণ বালুচরের মঞ্জুরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের কালিহাতীর মো. হেলাল,  শরীয়পুরের ডামুড্যার আরমান আলী সরদার, ভোলার বোরহান উদ্দিনের মো. সোহাগ, পাবনার চাটমোহরের মো. ফারুক, মামুন, শিপন হোসেন, জাফরুল ইসলাম, আলমাস উদ্দিন, মো. রাইহান, মেহেদী হাসান, ইয়াছিন, জাকির সর্দার, জসীম উদ্দিন, সাগর, খোকন, খোরশেদ, মান্নান, শামীম, মজিবুর, দুলাল, মিঠু, তপন, আনিছ, সাঈদ, জিয়া, আসাদ, রাজা, বাবু, তৈয়ব, আতাউর, আরিফ, আলম, জাবেদ, উজ্জল, রোমান ও হাবিবকে শনাক্ত করা হয়েছে।

ডিলার হিসেবে গাড়ি কোথায়ের বেশ কয়েকজন দাবি করেন, শুধু কমিশনের ভিত্তিতে তারা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ট্র্যাকিং সিস্টেম বিক্রি করে আসছিলেন। এর আড়ালে অন্য কোনো জালিয়াতির সঙ্গে তারা জড়িত নন।

জানতে চাইলে রূপনগর থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, অ্যাপস ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে চক্রটি জালিয়াতি করে আসছিল। শক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জড়িতরা অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তদন্তে আরও বিস্তারিত তথ্য উঠে আসবে।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ চক্রে তিন শতাধিক ‘সুবিধাভোগী’র সংশ্লিষ্টতা তারা পেয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা করা হচ্ছে। রূপনগর থানায় মামলার সূত্র ধরে পল্লবী ও সাতক্ষীরায় মামলা হয়েছে। আরও পাঁচ-ছয়টি থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তে অনেক পুলিশ সদস্যের কপাল পুড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.